দেশ ছেড়েছেন চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
গ্রাহক ও এজেন্সির কয়েকশ’ কোটি টাকা নিয়ে ‘লাপাত্তা’ ফ্লাইট এক্সপার্ট
হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে ডিজিটাল মাধ্যম অনলাইনে উড়োজাহাজের টিকিট ও হোটেল বুকিংয়ের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’। বাংলাদেশের অন্যতম প্রথম সারির অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি-ফ্লাইট এক্সপার্টের কর্ণধাররা কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি এবং গ্রাহকদের কয়েকশ’ কোটি টাকা নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ট্রাভেল এজেন্সিটির চেয়ারম্যান লায়ন এম এ রশীদ শাহ সম্রাট এবং তার ছেলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সালমান বিন রশীদ শাহ সায়েম গ্রাহকদের অন্তত তিনশ’ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে বলে খবর রটেছে। অসমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, ওয়েবসাইট বন্ধের একদিন আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাতের মধ্যে পিতা-পুত্র দু’জনেই নিরাপদে দেশ ছেড়েছেন। তবে, তাদের এ দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লেও বিষয়টি কোনোপক্ষ থেকেই এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফ্লাইট এক্সপার্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট শুক্রবার রাত থেকেই বন্ধ। শনিবার সকালে বিষয়টি প্রথম জানতে পারেন গ্রাহকরা। শুধু ওয়েবসাইট বন্ধই নয়, এজেন্সিটির অফিসও বন্ধ রয়েছে। ফেসবুক, লিঙ্কডিনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে ফ্লাইট এক্সপার্টের প্রচারণাও। প্রতিষ্ঠানটির সিইও সালমানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টও নিষ্ক্রিয় রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন খোদ প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা।
যেভাবে ফ্লাইট এক্সপার্টের যাত্রা শুরু :
অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর মধ্যে ফ্লাইট এক্সপার্ট বাংলাদেশে যাত্রা করা একেবারে শুরুর দিকে কোম্পানি। স্টার্টআপ হিসেবে যাত্রা শুরু করা এই ওটিএ ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও কার্যক্রম শুরু করে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মক্কা গ্রুপ অব কোম্পানিজের কর্ণধার রশীদ শাহ সম্রাটের হাত ধরেই এই অনলাইন প্লাটফর্মের শুরু। তিনি তার বিদেশ পড়ুয়া ছেলে সালমানকে দিয়ে শুরু করেন ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা।
দুই দশক আগের মক্কা ট্যুরর অ্যান্ড ট্রাভেলস নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ম্যানুয়াল টিকিট বিক্রির ব্যবসা এবং হজ এজেন্সির কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন ফ্লাইট এক্সপার্টের চেয়ারম্যান সম্রাট। অভিযোগ রয়েছে, ট্রাভেল এজেন্সির আড়ালে ‘টারজান ভিসার’ মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হন সম্রাট। টারজান ভিসা মূলত টারজানের মতো বন-জঙ্গলের বিপদসঙ্কুল পথে বিদেশ শ্রমিক পাঠানোর অবৈধ উপায়। যার মাধ্যমে প্রচুর অর্থ কামান সম্রাট।
সম্রাটের বিরুদ্ধে হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রী ঠকানোরও অভিযোগ রয়েছে। হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-হাব এর মহাসচিব থাকা অবস্থায় কৌশলে হজের খরচ বাড়িয়ে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। হাবের সাবেক সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের সাথে ওপরে ওপরে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক দেখালেও তলে তলে সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত ছিলেন সম্রাট। তার বিরুদ্ধে টিকিট বিক্রিতে সিন্ডিকেট গড়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব বিপুল বিত্ত-বৈভব কাজে লাগিয়ে আরও সম্পদের পাহাড় গড়তেই শুরু করেন আরেক প্লাটফরম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’।
ফ্লাইট এক্সপার্টের উত্থান যেভাবে:
প্লেনের টিকিট বিক্রি এবং হোটেল-মোটেল বুকিংয়ের মাধ্যমে ট্রাভেল ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ছোট্ট ব্যবসা গড়ে তোলেন সম্রাটপুত্র সালমান। তার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্য কোনো ওটিএ না থাকায় রাতারাতি পেয়ে যান খ্যাতি। সেটাকেই কাজে লাগায় ফ্লাইট এক্সপার্ট। ৫ থেকে ১৫ শতাংশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ের মাধ্যমে ফ্লাইটের টিকিট ও হোটেলের রুম বরাদ্দ শুরু করেন। এ যাত্রায় সঙ্গী হন এদেশিয় খ্যাতনামা কয়েকটা বড় বড় ম্যানুয়াল পদ্ধতির ট্রাভেল এজেন্সি। অভিযোগ রয়েছে, হাজী এয়ার ট্রাভেলস লিমিটেড, সোমা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস এবং গুলশানের একটা খ্যাতনামা ট্রাভেল এজেন্সির সহযোগিতায় ওটিএ ব্যবসায় সাফল্যের চূড়ায় উঠে যায় ফ্লাইট এক্সপার্ট। কিন্তু ব্যবসা সম্প্রসারণে একের পর এক বিনিয়োগ এবং অপরিকল্পিত মূল্যছাড়ের কারণে কয়েকবছর যেতেই হিমশিম খেতে থাকেন ফ্লাইট এক্সপার্টের কর্ণধার সম্রাট ও তার ছেলে সালমান। তাদের ব্যবসার অন্য শরিক এবং শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা নিজেদের পকেট ভারি করতে থাকায় হাবুডুবু খাওয়ার যোগাড় হয় ফ্লাইট এক্সপার্ট। ধুঁকতে শুরু করে তাদের রমরমা বাণিজ্য।
কেন দেশ ছাড়লেন ফ্লাইট এক্সপার্টের মালিকরা :
টিকিট বিক্রিতে সহযোগিতার নামে ফ্লাইট এক্সপার্টে শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে ডজনখানেক এজেন্সি। যার বেশিরভাগই বাকিতে টিকিট বিক্রির সুযোগ করে দিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে সোমা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস ও হাজী এয়ার ট্রাভেলস লিমিটেডসহ বেশক’টি কোম্পানি। টাকার নেশায় মরিয়া হয়ে এসব এজেন্সি অন্ধের মতো সাপোর্ট দিয়ে গেছে ফ্লাইট এক্সপার্টকে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিনিয়োগ। অভিযোগ রয়েছে, হাতে গোণা মাত্র তিন চারটি কোম্পানির ফ্লাইট এক্সপার্টের কাছে পাওনা কমবেশি ৫০ কোটি টাকা।
ফ্লাই্ট এক্সপার্টের সাথে যুক্ত সব ট্রাভেল এজেন্সির হিসাব যোগ করলে তাদের বকেয়া টাকার পরিমাণ দাঁড়াতে পারে শত কোটি টাকার মাইলফলক। তাই এসব বকেয়া না দিয়ে উল্টো গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা টিকিট এবং হোটেল বুকিংয়ের অগ্রিম টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেয়ার পথই বেছে নিয়েছেন ফ্লাইট এক্সপার্টের কর্ণধাররা। এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে তাদের সাথে ব্যবসায় জড়ানো বড় কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি।
এদের মধ্যে অন্যতম সোমা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী মোতাহার হোসেন বাবুল এবং হাজী এয়ারের কর্ণধার বাবু। তবে, ফ্লাইট এক্সপার্টের কাছে তাদের টিকিট বিক্রির ঠিক কী পরিমাণ টাকা বকেয়া বা ব্যবসায়িক লেনদেন রয়েছে তা জানাতে চাননি। জানা যায়নি টিকিট বিক্রি বা হোটেল-মোটেল বুকিংয়ের অর্থের সুনির্দিষ্ট পরিমাণও। তবে, সবমিলিয়ে এই অর্থের পরিমাণ দুই থেকে তিনশ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। যার বড় অংশ নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়াকেই নিরাপদ মনে করেছেন ফ্লাইট এক্সপার্টের চেয়ারম্যান সম্রাট এবং সিইও সালমান।
ফ্লাইট এক্সপার্ট বন্ধে দিনভর যা জানা গেলো :
ব্যবসা বন্ধ করে বিদেশে পালিয়ে গেছেন ফ্লাইট এক্সপার্টের সিইও সালমান বিন রশীদ শাহ সায়েম। অথচ তিনি জানিয়েছেন, ফ্লাইট এক্সপার্ট বন্ধের দায় তার নয়। সাঈদ হোসেন এবং সাকিব হোসেন নামের অন্যতম শীর্ষ পদে থাকা ফ্লাইট এক্সপার্টের দু’জন তার সাথে প্রতারণা করেছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তারা সুকৌশলে সালমানকে সবকিছুর জন্য দায়ী করেছে। এটা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এ নিয়ে তাকে কোনকিছু বলার বা প্রতিরোধ গড়ার বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন সালমান। কোম্পানি বন্ধের আগের দিনেও তারা দু’জনে মিলে তিন কোটি টাকা ফ্লাইট এক্সপার্টের হিসাব থেকে তুলে নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এসব অভিযোগ এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মুখে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে ব্যবসায়িক পার্টনার এবং সহকর্মীদের জানিয়েছেন সালমান। তিনি জানান, তার দেশে আসা হুমকি এবং একতরফা দোষারোপের কারণে নিজেকে রক্ষার স্বার্থে সরে গেছেন। এ পরিস্থিতির জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে চলে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা তার ছিল না’।
সাঈদ আর সাকিবের অঢেল সম্পদ যেভাবে :
সালমান এবং তার বাবার বিরুদ্ধে তিনশ’ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হবার খবর সত্য নয় বলে দাবি করেছে তার পরিবার। নাম প্রকাশে একটি এজেন্সি মালিক এবং ফ্লাইট এক্সপার্টের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তাও জানান, সাঈদ এবং সাকিব দু’জনই অত্যন্ত ধূর্ত। তারা ফ্লাইট এক্সপার্টের টাকা দিয়ে মার্সিডিজ গাড়ি কেনার পাশাপাশি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় কোটি কোটি টাকা দামে বিলাসবহুল অভিজাত ফ্ল্যাট কিনেছেন। একেকটি ফ্ল্যাটের দাম কমবেশি ৭/৮ কোটি টাকা এমন ধারণা তাদের। ইভ্যালি বা ডেসটিনি পর্যায়ে ফ্লাইট এক্সপার্টকে নামিয়ে আনার পেছনে এ দু’জনের যোগসাজস রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এ নিয়ে একতরফ সালমানকে দায়ী না করে এ দু’জনকেও জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি তাদের।
ফ্লাইট এক্সপার্ট বন্ধের বিষয়ে সালমানের বাবা সম্রাট জানিয়েছেন, এফইবিডি নামের একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে ফ্লাইট এক্সপার্টের দ্বন্দ্বের কারণেই তারা ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দিয়েছে। এর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে, গ্রাহক বা এজেন্টরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়টি মাথায় রেখে তারা দ্রুত ব্যবসায় ফেরার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন। তবে, তিনি এ মুহূর্তে দেশে নাকি বিদেশে রয়েছেন তা স্পষ্ট করেননি সম্রাট। ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবসার সাথে সরাসরি তিনি যুক্ত নন বলেও দাবি করেন তিনি।
আদৌ কী চালু হবে ফ্লাইট এক্সপার্ট:
ফ্লাইট এক্সপার্ট চালু হওয়ার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না ট্রাভেল এজেন্সির মালিকরা। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতরা পড়েছেন বড় ধরনের অনিশ্চয়তায়। ঝুঁকিতে পড়েছে ট্রাভেল এজেন্সি এবং ব্যাংকের বিনিয়োগও। শোনা যাচ্ছে, ফ্লাইট এক্সপার্টের সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্র্যাক ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংক তাদের প্রতিষ্ঠানে অর্থায়ন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির এ প্রতারণার ফলে ব্যাংকের বিনিয়োগও নতুন করে ঝুঁকিতে পড়লো। এর ফলে ওটিএ খাতের অন্য ব্যবসা বা স্টার্টআপে ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে বিনিয়োগ কালো তালিকাভুক্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানি এমন প্রতারণা করায় নামীদামি অন্য অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এমন শঙ্কায় অন্য ওটিএ মালিকরা। অথচ এক দশক না যেতেই বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সি খাতে প্রভাবশালী নাম হয়ে উঠেছিল ফ্লাইট এক্সপার্ট। খুব কম সময়ের মধ্যে তারা দেশের ফ্লাইট টিকিটিং শিল্পে বড় জায়গা দখল করে নেয়। যতদূর জানা যায়, দেশে অনলাইট টিকিট বাণিজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশের বাজার একাই দখল করেছিল ফ্লাইট এক্সপার্ট।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ওটিএ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্তরা। অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ফার্স্ট ট্রিপের সিওও হাসনাইন রফিক জানান, ফ্লাইট এক্সপার্টের মতো প্রতিষ্ঠানের এমন খবর খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় গোটা অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায় আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ট্রাভেল ব্যবসায়।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ-আটাবের সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে বলে আসছিলাম অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো সঠিক প্রক্রিয়ায় ব্যবসা করছে না। টিকিট বিক্রির অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমে সাধ্যের অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট এবং প্রতারণার মাধ্যমে তারা নিজেদের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের পরিণতি ডেসটিনি বা ইভ্যালির মতো হবে এটাই স্বাভাবিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাভেল এজেন্সির স্বত্তাধিকারীরা বলছেন, মক্কা ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল। হজ কার্যক্রম পরিচালনা, টিকিটিং থেকে শুরু করে হাবের মহাসচিব থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে মক্কা গ্রুপের কর্ণধার এবং ফ্লাইট এক্সপার্টের চেয়ারম্যান এম এ রশীদ শাহ সম্রাটের বিরুদ্ধে।
হজ পরিচালনার সময় সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া না করা নিয়েও তার বিরুদ্ধে কেলেঙ্কারির অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ। এমনকি IATA নির্ধারিত ব্যাংক গ্যারান্টি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় তার এজেন্সি পরিচালনা নিয়েও জটিলতা তৈরির অভিযোগ রয়েছে। নির্ধারিত কমিশনের বাইরে অতিরিক্ত মূল্যছাড় বা ডিসকাউন্টের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জেনেও অন্য এজেন্সিকে পথে বসানোর মানসিকতা থেকে ফ্লাইট এক্সপার্ট সাধ্যের অতিরিক্ত অফার দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ায় ব্যস্ত ছিল বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ। এসবই ফ্লাইট এক্সপার্টকে পথে বসিয়েছে। মাঝ থেকে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা টিকিটের অর্থ এবং ট্রাভেল এজেন্সির কাছ থেকে বাকিতে নেয়া টিকিটের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন ফ্লাই্ট এক্সপার্টের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। পিতা-পুত্রের এমন কর্মকাণ্ড এখন ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসার টক অব দ্য টাউন।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে এম এ রশীদ শাহ সম্রাট জানান, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বন্ধ রয়েছে ফ্লাইট এক্সপার্ট। এর সাথে আমি জড়িত নই। এ কোম্পানির কোনো শেয়ারহোল্ডারও আমি নই। তবে, গ্রাহকের যেন ক্ষতি না হয় সেই চেষ্টায় ফ্লাইট এক্সপার্ট যেন চালু হয় সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছি’।
বিজভিউ/ জেডএইচএস