ঢাকা ০৪:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
দুই লাখ টাকার মাইলফলক ছাড়ালো স্বর্ণের ভরি এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ পেছানোর যুক্তি নেই : আনিসুজ্জামান চৌধুরী জাকসুর ভিপি স্বতন্ত্রপ্রার্থী জিতু, জিএস শিবিরের মাজহারুল আইন শক্তিশালী না হলে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না ইসলামী ব্যাংকের নতুন এমডি ওমর ফারুক খাঁন ৫০ কোটির ব্যাংক গ্যারান্টিতে শত শত কোটি টাকার টিকিট বেচতো ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ ‘রিফান্ড’ আতঙ্কে টিকিটের টাকা গচ্চার শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা গ্রাহক ও এজেন্সির কয়েকশ’ কোটি টাকা নিয়ে ‘লাপাত্তা’ ফ্লাইট এক্সপার্ট পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নেমে আসা ‘সন্তোষজনক’: আমীর খসরু অশুল্ক চুক্তির ব্যাপারে কূটনৈতিক ব্যাখ্যা জরুরি: ড. গোলাম মোয়াজ্জেম

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে নতুন প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের

বিজভিউ রিপোর্ট:

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের একাদশ দিনের আলোচনা বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নতুন রূপরেখা প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে এটি নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। এ ছাড়া প্রধান বিচারপতির নিয়োগ ও জরুরি অবস্থা জারির বিধান নিয়ে আলোচনা হলেও ঐকমত্য হয়নি।

দলগুলোর সঙ্গে আগের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) তিনটি বিষয়ে সংশোধিত প্রস্তাব হাজির করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রস্তাবটি ছিল নতুন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল ছিল দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার একাদশ দিন। এই পর্বে ৩০টি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। রবিবার আবার আলোচনা শুরু হবে।

সংবিধান সংস্কার কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করেছিল। তবে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এনসিসির প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়। এর ফলে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার রূপরেখার সুপারিশও বাদ হয়ে যায়। ২ জুলাই ঐকমত্য কমিশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেখানে সংবিধানে আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে বিধান ছিল, তা এবং আরও দু-একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন বিচার বিভাগ এবং রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে না রাখার বিষয়ে বেশির ভাগ দল মত দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ঐকমত্য কমিশন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন নিয়ে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে।

প্রস্তাবে বলা হয়, যদি সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হয়, তাহলে উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান/স্পিকার, ডেপুটি চেয়ারম্যান/ডেপুটি স্পিকার, সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা, সংখ্যালঘু দলের নেতা, উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী অন্য দলগুলোর একজন প্রতিনিধি, নিম্নকক্ষের স্পিকার, সংসদ নেতা এবং নিম্নকক্ষের বিরোধী দলের নেতার সমন্বয়ে একটি ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন’বিষয়ক সর্বদলীয় কমিটি গঠন করা হবে। জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার ৯০ দিন আগে এ কমিটি গঠন করা হবে।

উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান/স্পিকার অথবা প্যানেল সভাপতির মধ্যে যিনি বয়োজ্যেষ্ঠ, তিনি সর্বদলীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সভাপতি উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষে প্রতিনিধিত্ব আছে এমন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য নাম চাইবেন। এই পদ্ধতিতে পাওয়া নামগুলো নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনার পর কমিটি সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের জন্য একজনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি তাঁকে নিয়োগ দেবেন।

এরপর প্রধান উপদেষ্টা সমাজের নির্দলীয় ব্যক্তিদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ১৫ জনের নাম উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাঁদের নিয়োগ দেবেন।

ঐকমত্য কমিশনের আরেকটি প্রস্তাবে বলা হয়, সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর বা সংসদের মেয়াদ শেষ হলে যে তারিখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কার্যভার গ্রহণ করবেন, সেই তারিখ থেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী তাঁর পদের কার্যভার গ্রহণ করার তারিখ পর্যন্ত মেয়াদে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে।

গতকাল এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। কয়েকটি দলের প্রতিনিধি বৈঠকে বলেন, প্রস্তাবটি আলোচনার মধ্যে তাদের দেওয়া হয়েছে। এটি নিয়ে দলে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন, এ জন্য সময় দরকার।

আলোচনা শেষে বিকেলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা যত দূর সম্ভব ত্রুটিহীন হয় এবং যে ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। এই বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

বৈঠকে জরুরি অবস্থা জারির বিধান নিয়েও আলোচনা হয়। বিদ্যমান সংবিধানে জরুরি অবস্থা জারির বিধান পরিবর্তন করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত। গত সোমবার ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় একটি নতুন বিধান প্রস্তাব করা হয়েছিল। তা নিয়ে সেদিন ঐকমত্য হয়নি। এ নিয়ে গতকাল ঐকমত্য কমিশন একটি সংশোধিত প্রস্তাব আনে। তাতে বলা হয়, মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন। ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে’ জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান বাদ যাবে। জরুরি অবস্থা চলাকালে নাগরিকের দুটি অধিকার স্থগিত করা যাবে না। সে দুটি হলো জীবনের অধিকার এবং নির্যাতন ও নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তি থেকে রক্ষা।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রশ্নে আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করার প্রস্তাব করেছিল বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। আগের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এ নিয়ে কিছুটা সংশোধিত প্রস্তাব উপস্থাপন করে ঐকমত্য কমিশন। তাতে বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ বা অসার্মথ্যের অভিযোগের কারণে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধীনে কোনো তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান না থাকলে, রাষ্ট্রপতি তাঁকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন।’

গতকাল একাধিক দল আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুজন বিচারপতির মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেয়। আবার অনেক দল কমিশনের প্রস্তাবকে সমর্থন করে। তবে শেষ পর্যন্ত এটি নিয়ে পুরোপুরি ঐকমত্য হয়নি।

আলোচনা শেষে গতকাল বিকেলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। গতকাল আলোচনায় কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

বিজভিউ/ জেডএইচএস

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:২১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
৭৩ বার পড়া হয়েছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে নতুন প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের

আপডেট সময় ০৭:২১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের একাদশ দিনের আলোচনা বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নতুন রূপরেখা প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে এটি নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। এ ছাড়া প্রধান বিচারপতির নিয়োগ ও জরুরি অবস্থা জারির বিধান নিয়ে আলোচনা হলেও ঐকমত্য হয়নি।

দলগুলোর সঙ্গে আগের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) তিনটি বিষয়ে সংশোধিত প্রস্তাব হাজির করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রস্তাবটি ছিল নতুন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল ছিল দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার একাদশ দিন। এই পর্বে ৩০টি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। রবিবার আবার আলোচনা শুরু হবে।

সংবিধান সংস্কার কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করেছিল। তবে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এনসিসির প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়। এর ফলে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার রূপরেখার সুপারিশও বাদ হয়ে যায়। ২ জুলাই ঐকমত্য কমিশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেখানে সংবিধানে আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে বিধান ছিল, তা এবং আরও দু-একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন বিচার বিভাগ এবং রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে না রাখার বিষয়ে বেশির ভাগ দল মত দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ঐকমত্য কমিশন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন নিয়ে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে।

প্রস্তাবে বলা হয়, যদি সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হয়, তাহলে উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান/স্পিকার, ডেপুটি চেয়ারম্যান/ডেপুটি স্পিকার, সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা, সংখ্যালঘু দলের নেতা, উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী অন্য দলগুলোর একজন প্রতিনিধি, নিম্নকক্ষের স্পিকার, সংসদ নেতা এবং নিম্নকক্ষের বিরোধী দলের নেতার সমন্বয়ে একটি ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন’বিষয়ক সর্বদলীয় কমিটি গঠন করা হবে। জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার ৯০ দিন আগে এ কমিটি গঠন করা হবে।

উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান/স্পিকার অথবা প্যানেল সভাপতির মধ্যে যিনি বয়োজ্যেষ্ঠ, তিনি সর্বদলীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সভাপতি উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষে প্রতিনিধিত্ব আছে এমন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য নাম চাইবেন। এই পদ্ধতিতে পাওয়া নামগুলো নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনার পর কমিটি সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের জন্য একজনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি তাঁকে নিয়োগ দেবেন।

এরপর প্রধান উপদেষ্টা সমাজের নির্দলীয় ব্যক্তিদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ১৫ জনের নাম উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাঁদের নিয়োগ দেবেন।

ঐকমত্য কমিশনের আরেকটি প্রস্তাবে বলা হয়, সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর বা সংসদের মেয়াদ শেষ হলে যে তারিখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কার্যভার গ্রহণ করবেন, সেই তারিখ থেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী তাঁর পদের কার্যভার গ্রহণ করার তারিখ পর্যন্ত মেয়াদে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে।

গতকাল এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। কয়েকটি দলের প্রতিনিধি বৈঠকে বলেন, প্রস্তাবটি আলোচনার মধ্যে তাদের দেওয়া হয়েছে। এটি নিয়ে দলে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন, এ জন্য সময় দরকার।

আলোচনা শেষে বিকেলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা যত দূর সম্ভব ত্রুটিহীন হয় এবং যে ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। এই বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

বৈঠকে জরুরি অবস্থা জারির বিধান নিয়েও আলোচনা হয়। বিদ্যমান সংবিধানে জরুরি অবস্থা জারির বিধান পরিবর্তন করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত। গত সোমবার ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় একটি নতুন বিধান প্রস্তাব করা হয়েছিল। তা নিয়ে সেদিন ঐকমত্য হয়নি। এ নিয়ে গতকাল ঐকমত্য কমিশন একটি সংশোধিত প্রস্তাব আনে। তাতে বলা হয়, মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন। ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে’ জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান বাদ যাবে। জরুরি অবস্থা চলাকালে নাগরিকের দুটি অধিকার স্থগিত করা যাবে না। সে দুটি হলো জীবনের অধিকার এবং নির্যাতন ও নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তি থেকে রক্ষা।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রশ্নে আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করার প্রস্তাব করেছিল বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। আগের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এ নিয়ে কিছুটা সংশোধিত প্রস্তাব উপস্থাপন করে ঐকমত্য কমিশন। তাতে বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ বা অসার্মথ্যের অভিযোগের কারণে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধীনে কোনো তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান না থাকলে, রাষ্ট্রপতি তাঁকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন।’

গতকাল একাধিক দল আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুজন বিচারপতির মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেয়। আবার অনেক দল কমিশনের প্রস্তাবকে সমর্থন করে। তবে শেষ পর্যন্ত এটি নিয়ে পুরোপুরি ঐকমত্য হয়নি।

আলোচনা শেষে গতকাল বিকেলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। গতকাল আলোচনায় কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

বিজভিউ/ জেডএইচএস